০৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ সম্মেলন

  • প্রবাস বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৬:৪০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪
  • ৬৬ ভিউ

প্রেস ব্রেফিং….
দেশে বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান ৬ আগস্ট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জনাকীর্ণ সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য প্রদান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ-এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জনাব হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব আবদুর রব প্রমুখ।

দেশবাসীর উদ্দেশে সংগঠনের আমীর ডা: শফিকুর রহমান -এর প্রদত্ত বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলোঃ-

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
আপনারা জানেন, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমাদের যুব ছাত্রসমাজ তাদের একটি সুনির্দিষ্ট অধিকার সরকারি চাকুরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে ওঠে। দেশবাসী সকলেই স্বীকার করেছেন তাদের দাবিসমূহ ছিল যৌক্তিক এবং ন্যায় সঙ্গত। এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন হাজার ছাত্র-জনতা। ছাত্রসহ অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। হারিয়ে যায়া মানুষকে তাদের পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার শক্তি আমাদের নেই। এই আন্দোলন করতে গিয়ে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করি তিনি যেন তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করেন। যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করছি। জাতির এই পরিবর্তন হচ্ছে মহান আল্লাহ তাআলার ফসল। এই জন্য আমরা মহান আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করছি। যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন তাদের মহান রব সুস্থতা দান করুন।

সাংবাদিক বন্ধুগণ,
অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমরা সকলেই জানি এই সরকার প্রায় ১৬ বছর দেশ শাসন করেছেন। তিনি ৫ আগষ্ট জনরোষে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এবং তিনি জাতিকে কোনো দিক নির্দেশনা না দিয়েই দেশ ছেড়ে চলে যান। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে আপামর জনসাধারণ, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা, নারী-পুরুষ সকলেই সম্পৃক্ত হয়েছেন। দেশের সর্বস্তরের মানুষ জালিম সরকার দ্বারা কোনো না কোনোভাবে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দেশবাসী পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে এসেছেন। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু কারো কারো উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে দুর্বত্তরা শহর-বন্দর-গ্রামে নাশকতা শুরু করে। সরকারি স্থাপনা, প্রতিপক্ষের বাড়ি-ঘর এবং ক্ষেত্র বিশেষে কিছু কিছু জায়গায় বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ে আঘাত হানা হয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিবেকসম্পন্ন মানুষ এই কাজগুলো করতে পারে না। এই দুর্বত্তদের ব্যাপারে আমরা কয়েকবার নিন্দা জ্ঞাপন করেছি এবং আজকেও করছি। এই অবস্থায় আমরা দেশবাসীর পাশাপাশি আমাদের সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তিকে সকল ধর্মাবলম্বী মানুষের সহায়-সম্পত্তি রক্ষায় পাহারাদারের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছি। আমাদের দেশে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘিষ্ট নয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যারাই এদেশে জন্মগ্রহণ করেছে, তারা সকলেই এদেশের নাগরিক এবং সকলের অধিকার সমান। এখানে আপন সত্তায় সকলেই উজ্জ্বল। কাজেই সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘিষ্ট এই প্রশ্ন অবান্তর। আমি আবারো আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা যেখানেই দুর্বৃত্তপনা দেখবেন, কঠোর হস্তে দমন করবেন। কথা দিচ্ছি প্রশাসনকে আমরা এব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যেই আমরা সংগঠনের সর্বস্তরের দায়িত্বশীলদেরকে এব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য নিজ নিজ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। আল-হামদুলিল্লাহ গত রাত থেকেই আমাদের নেতৃবৃন্দ এই আহ্বানে সারা দিয়ে সারাদেশে তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের এই দেশে সকল দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করা আমাদের সংগঠনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে প্রশাসনসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষের দায়িত্বশীল ভূমিকা থাকা আবশ্যক। যদি আমরা গোটা সমাজ এবং প্রশাসন একসাথে কাজ করতে পারি, তাহলে এই দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করা অবশ্যই সম্ভব। যারা এই নাশকতা ও দুর্বৃত্তপনার সাথে জড়িত তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

সাংবাদিক বন্ধুগণ,
এই দেশটা আমাদের। আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা তাদের মনের ক্ষোভ থেকে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। রেমিট্যান্স বন্ধ করার ব্যাপারে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। দেশের অস্তিত্বই যদি না থাকে আমরা বাঁচব কী করে। তাই প্রবাসী ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের আহ্বান আসুন আমরা বিধ্বস্ত দেশটাকে একযোগে সহযোগিতা করে গড়ে তুলি এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পালন করি।

প্রিয় ভাইয়েরা, আমি আজকের মত এখানেই আমার বক্তব্য শেষ করতে চাচ্ছি। মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য আপনাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমরা আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে সাংবাদিক বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে এই জাতি গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস চালাবো। আপনারা জানেন গতকাল মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসেছিলেন। সেখানে আমরা কিছু দাবি পেশ করেছি। অনেকগুলো দাবি যুক্তসঙ্গত মনে করে তিনি তখনই মেনে নিয়েছেন এবং কিছু দাবি বাস্তবায়নও করেছেন। আমাদের একটা বড় দাবি ছিল দেশের এই সংকট উত্তরণে অতি দ্রুত একটি ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট ফর্ম করতে হবে। এর আগে অবশ্যই জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দেবেন বলে তিনি আমাদের কথা দিয়েছেন এবং অতিদ্রুত একটি অন্তবর্তী সরকার গঠন করবেন।
সম্মানিত ভাইয়েরা,

মহামান রাষ্ট্রপতি বরাবরে আমরা জোর দাবি জানাব তিনি যেন অতি দ্রুত সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার পদ্ধতির কাজ শুরু করেন। এবং গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার যেন বিলম্ব না করে অতিদ্রুত একটি অর্থবহ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সত্যিকার জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসে, সেই উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আপনাদের আবারো ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ সম্মেলন

আপডেট সময় : ০৬:৪০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪

প্রেস ব্রেফিং….
দেশে বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান ৬ আগস্ট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জনাকীর্ণ সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য প্রদান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ-এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জনাব হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব আবদুর রব প্রমুখ।

দেশবাসীর উদ্দেশে সংগঠনের আমীর ডা: শফিকুর রহমান -এর প্রদত্ত বক্তব্য নিচে তুলে ধরা হলোঃ-

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
আপনারা জানেন, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমাদের যুব ছাত্রসমাজ তাদের একটি সুনির্দিষ্ট অধিকার সরকারি চাকুরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে ওঠে। দেশবাসী সকলেই স্বীকার করেছেন তাদের দাবিসমূহ ছিল যৌক্তিক এবং ন্যায় সঙ্গত। এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন হাজার ছাত্র-জনতা। ছাত্রসহ অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। হারিয়ে যায়া মানুষকে তাদের পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার শক্তি আমাদের নেই। এই আন্দোলন করতে গিয়ে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করি তিনি যেন তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করেন। যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করছি। জাতির এই পরিবর্তন হচ্ছে মহান আল্লাহ তাআলার ফসল। এই জন্য আমরা মহান আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করছি। যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন তাদের মহান রব সুস্থতা দান করুন।

সাংবাদিক বন্ধুগণ,
অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমরা সকলেই জানি এই সরকার প্রায় ১৬ বছর দেশ শাসন করেছেন। তিনি ৫ আগষ্ট জনরোষে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এবং তিনি জাতিকে কোনো দিক নির্দেশনা না দিয়েই দেশ ছেড়ে চলে যান। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে আপামর জনসাধারণ, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা, নারী-পুরুষ সকলেই সম্পৃক্ত হয়েছেন। দেশের সর্বস্তরের মানুষ জালিম সরকার দ্বারা কোনো না কোনোভাবে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দেশবাসী পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে এসেছেন। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু কারো কারো উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে দুর্বত্তরা শহর-বন্দর-গ্রামে নাশকতা শুরু করে। সরকারি স্থাপনা, প্রতিপক্ষের বাড়ি-ঘর এবং ক্ষেত্র বিশেষে কিছু কিছু জায়গায় বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ে আঘাত হানা হয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিবেকসম্পন্ন মানুষ এই কাজগুলো করতে পারে না। এই দুর্বত্তদের ব্যাপারে আমরা কয়েকবার নিন্দা জ্ঞাপন করেছি এবং আজকেও করছি। এই অবস্থায় আমরা দেশবাসীর পাশাপাশি আমাদের সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তিকে সকল ধর্মাবলম্বী মানুষের সহায়-সম্পত্তি রক্ষায় পাহারাদারের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছি। আমাদের দেশে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘিষ্ট নয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যারাই এদেশে জন্মগ্রহণ করেছে, তারা সকলেই এদেশের নাগরিক এবং সকলের অধিকার সমান। এখানে আপন সত্তায় সকলেই উজ্জ্বল। কাজেই সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘিষ্ট এই প্রশ্ন অবান্তর। আমি আবারো আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা যেখানেই দুর্বৃত্তপনা দেখবেন, কঠোর হস্তে দমন করবেন। কথা দিচ্ছি প্রশাসনকে আমরা এব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যেই আমরা সংগঠনের সর্বস্তরের দায়িত্বশীলদেরকে এব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য নিজ নিজ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। আল-হামদুলিল্লাহ গত রাত থেকেই আমাদের নেতৃবৃন্দ এই আহ্বানে সারা দিয়ে সারাদেশে তারা যথাযথ দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের এই দেশে সকল দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করা আমাদের সংগঠনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে প্রশাসনসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষের দায়িত্বশীল ভূমিকা থাকা আবশ্যক। যদি আমরা গোটা সমাজ এবং প্রশাসন একসাথে কাজ করতে পারি, তাহলে এই দুর্বৃত্তপনা বন্ধ করা অবশ্যই সম্ভব। যারা এই নাশকতা ও দুর্বৃত্তপনার সাথে জড়িত তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

সাংবাদিক বন্ধুগণ,
এই দেশটা আমাদের। আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা তাদের মনের ক্ষোভ থেকে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। রেমিট্যান্স বন্ধ করার ব্যাপারে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। দেশের অস্তিত্বই যদি না থাকে আমরা বাঁচব কী করে। তাই প্রবাসী ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের আহ্বান আসুন আমরা বিধ্বস্ত দেশটাকে একযোগে সহযোগিতা করে গড়ে তুলি এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পালন করি।

প্রিয় ভাইয়েরা, আমি আজকের মত এখানেই আমার বক্তব্য শেষ করতে চাচ্ছি। মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য আপনাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমরা আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে সাংবাদিক বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে এই জাতি গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রয়াস চালাবো। আপনারা জানেন গতকাল মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসেছিলেন। সেখানে আমরা কিছু দাবি পেশ করেছি। অনেকগুলো দাবি যুক্তসঙ্গত মনে করে তিনি তখনই মেনে নিয়েছেন এবং কিছু দাবি বাস্তবায়নও করেছেন। আমাদের একটা বড় দাবি ছিল দেশের এই সংকট উত্তরণে অতি দ্রুত একটি ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট ফর্ম করতে হবে। এর আগে অবশ্যই জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দেবেন বলে তিনি আমাদের কথা দিয়েছেন এবং অতিদ্রুত একটি অন্তবর্তী সরকার গঠন করবেন।
সম্মানিত ভাইয়েরা,

মহামান রাষ্ট্রপতি বরাবরে আমরা জোর দাবি জানাব তিনি যেন অতি দ্রুত সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার পদ্ধতির কাজ শুরু করেন। এবং গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার যেন বিলম্ব না করে অতিদ্রুত একটি অর্থবহ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সত্যিকার জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসে, সেই উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আপনাদের আবারো ধন্যবাদ।