০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪

মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে ৩৫০৪.০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে LAISE প্রকল্প গ্রহণ

প্রবাস বাংলা ডেস্ক:

বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ” লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (LAISE)”প্রজেক্ট গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৫০৪.০৮ কোটি টাকা।

বাংলাদেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে রূপান্তরে সরকার বিগত দশকসমূহে ব্যাপক অগ্রগতি সাধন করেছে, যার ফলে শিক্ষায় লক্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু কোভিড-১৯ অতিমারি শিক্ষার চলমান উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, বিশেষত মাধ্যমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শিখন খাটতি সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে ও নতুন শিক্ষাক্রমের চাহিদাপূরণে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (LAISE) প্রজেক্ট গ্রহণ করেছে । লেইস প্রজেক্ট ৩টি মূল লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে বাস্তবায়িত হবে: মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিখন ত্বরান্বিত ও ধরে রাখার হার বৃদ্ধি, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকগণের দক্ষতা উন্নয়ন এবং মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থার সহনক্ষমতা উন্নয়ন। লেইস প্রকল্পের মাধ্যমে
মাধ্যমিক পর্যায়ের মোট ৩৬৭৮৯০ জন শিক্ষককে (স্কুল: ২৭০৮১০. ও মাদ্রাসা: ৯৭০০০) বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। যেমন: মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকগণের বিষয়ভিত্তিক প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং, নতুন শিক্ষকগণের জন্য বেসিক ট্রেইনিং, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের জন্য (স্কুল ও মাদ্রাসা) লীডারশীপ ট্রেনিং, শিক্ষার্থীগণের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন, কাউন্সেলিং ও বুলিং প্রতিরোধ বিষয়ে শিক্ষকগণের প্রশিক্ষণ, ব্লেন্ডেড লার্নিং বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, লাইব্রেরিয়ানগণের জন্য প্রশিক্ষণ, শিক্ষকগণের জন্য আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। মাধ্যমিক পর্যায়ের ১০৩৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (৬৯২৮টি স্কুল ৩৪১২টি মাদ্রাসা) প্রতিটিতে ২টি করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ উদ্যোগে মোট ২৯৫৮৫টি প্রতিষ্ঠানে (স্কুল ১৮৮৯৪; স্কুল ও কলেজ ১৪২০ এবং মাদ্রাসা ১২৯১) লাইব্রেরির অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। এছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৯৫৮৫টি প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ করা হবে।
আজ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী রাজধানীর একটি হোটেলে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে শিক্ষায় যে রুপান্তরের কাজ চলছে তার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ১৬ বছর পর্যন্ত কম খরচে দেশের সকল শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। বর্তমান কারিকুলামের শিখন পদ্ধতি ভিন্ন। গতানুগতিক শিক্ষার ধারনা থেকে এই পদ্ধতি ভিন্ন। এটা অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষা। গতানুগতিক শিক্ষায় দেখা যায় ,শুধুমাত্র কিছু তথ্য আমরা মুখস্ত করি, মেমোরি ড্রিভেন প্রসেস, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মুখস্ত নির্ভর শিক্ষা এবং স্মরণশক্তিকে মেধা বলে চালিয়ে দেওয়ার যে মানসিকতা সেখান থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে আমরা স্মার্ট প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারবো না।’ বর্তমান কারিকুলামের মূলনীতির সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নলেজ, ভ্যালুজ এবং স্কিলস এই তিনটির সমন্বয়ে হবে আমাদের শিক্ষা। অসাম্প্রদায়িকতা, সমতা, জাতীয়তাবোধ, কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা প্রভৃতি ভ্যালুসগুলো আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। নলেজ দেয়ার জায়গায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, মূল্যবোধের জায়গায়তেও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এক্সেস ও ইকুইটি (সমতা) নিশ্চিত করতে হবে। প্রক্রিয়াগত কারণে অথবা অর্থের অভাবে যেনও কোনও শিক্ষার্থী ঝরে না পরে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সে লক্ষ্যে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে, যাতে করে শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে।”
মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন , ‘যে প্রক্রিয়ায় আমরা মূল্যায়ন করছিলাম সেটিও একটি চ্যালেঞ্জ। মূল্যায়নের কারণে, অর্থের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পরছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার,
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. অ্যাবদুলেই সিক।
প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা ও শিক্ষকের মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই লেইস প্রজেক্ট ।’
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে সকলের প্রতি আহ্বানন জানান প্রতিমন্ত্রী।

মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে ৩৫০৪.০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে LAISE প্রকল্প গ্রহণ

আপডেট সময় : ০৩:৫২:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

প্রবাস বাংলা ডেস্ক:

বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ” লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (LAISE)”প্রজেক্ট গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৫০৪.০৮ কোটি টাকা।

বাংলাদেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে রূপান্তরে সরকার বিগত দশকসমূহে ব্যাপক অগ্রগতি সাধন করেছে, যার ফলে শিক্ষায় লক্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু কোভিড-১৯ অতিমারি শিক্ষার চলমান উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে, বিশেষত মাধ্যমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে শিখন খাটতি সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে ও নতুন শিক্ষাক্রমের চাহিদাপূরণে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন (LAISE) প্রজেক্ট গ্রহণ করেছে । লেইস প্রজেক্ট ৩টি মূল লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে বাস্তবায়িত হবে: মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিখন ত্বরান্বিত ও ধরে রাখার হার বৃদ্ধি, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকগণের দক্ষতা উন্নয়ন এবং মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থার সহনক্ষমতা উন্নয়ন। লেইস প্রকল্পের মাধ্যমে
মাধ্যমিক পর্যায়ের মোট ৩৬৭৮৯০ জন শিক্ষককে (স্কুল: ২৭০৮১০. ও মাদ্রাসা: ৯৭০০০) বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। যেমন: মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকগণের বিষয়ভিত্তিক প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং, নতুন শিক্ষকগণের জন্য বেসিক ট্রেইনিং, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের জন্য (স্কুল ও মাদ্রাসা) লীডারশীপ ট্রেনিং, শিক্ষার্থীগণের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন, কাউন্সেলিং ও বুলিং প্রতিরোধ বিষয়ে শিক্ষকগণের প্রশিক্ষণ, ব্লেন্ডেড লার্নিং বিষয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, লাইব্রেরিয়ানগণের জন্য প্রশিক্ষণ, শিক্ষকগণের জন্য আইসিটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। মাধ্যমিক পর্যায়ের ১০৩৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (৬৯২৮টি স্কুল ৩৪১২টি মাদ্রাসা) প্রতিটিতে ২টি করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ উদ্যোগে মোট ২৯৫৮৫টি প্রতিষ্ঠানে (স্কুল ১৮৮৯৪; স্কুল ও কলেজ ১৪২০ এবং মাদ্রাসা ১২৯১) লাইব্রেরির অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। এছাড়াও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৯৫৮৫টি প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ করা হবে।
আজ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী রাজধানীর একটি হোটেলে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে শিক্ষায় যে রুপান্তরের কাজ চলছে তার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ১৬ বছর পর্যন্ত কম খরচে দেশের সকল শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। বর্তমান কারিকুলামের শিখন পদ্ধতি ভিন্ন। গতানুগতিক শিক্ষার ধারনা থেকে এই পদ্ধতি ভিন্ন। এটা অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষা। গতানুগতিক শিক্ষায় দেখা যায় ,শুধুমাত্র কিছু তথ্য আমরা মুখস্ত করি, মেমোরি ড্রিভেন প্রসেস, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মুখস্ত নির্ভর শিক্ষা এবং স্মরণশক্তিকে মেধা বলে চালিয়ে দেওয়ার যে মানসিকতা সেখান থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে আমরা স্মার্ট প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারবো না।’ বর্তমান কারিকুলামের মূলনীতির সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নলেজ, ভ্যালুজ এবং স্কিলস এই তিনটির সমন্বয়ে হবে আমাদের শিক্ষা। অসাম্প্রদায়িকতা, সমতা, জাতীয়তাবোধ, কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা প্রভৃতি ভ্যালুসগুলো আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। নলেজ দেয়ার জায়গায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, মূল্যবোধের জায়গায়তেও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এক্সেস ও ইকুইটি (সমতা) নিশ্চিত করতে হবে। প্রক্রিয়াগত কারণে অথবা অর্থের অভাবে যেনও কোনও শিক্ষার্থী ঝরে না পরে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সে লক্ষ্যে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে, যাতে করে শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে।”
মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন , ‘যে প্রক্রিয়ায় আমরা মূল্যায়ন করছিলাম সেটিও একটি চ্যালেঞ্জ। মূল্যায়নের কারণে, অর্থের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পরছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার,
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. অ্যাবদুলেই সিক।
প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা ও শিক্ষকের মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই লেইস প্রজেক্ট ।’
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে সকলের প্রতি আহ্বানন জানান প্রতিমন্ত্রী।