
প্রবাস বাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহে নিয়মিত কনস্যুলার ও কল্যাণসেবা প্রদানের পাশাপাশি প্রবাসীদের কল্যাণে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এই সময়ে দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দল ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার পরিদর্শন করে ৭২ জন আটক বাংলাদেশি অভিবাসীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছে এবং যাচাই-বাছাই শেষে ট্র্যাভেল পারমিট (আউটপাস) ইস্যু পূর্বক আইওএম-এর সহযোগিতায় তাদের দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়াও, তারিক সিক্কা ডিটেনশন সেন্টার থেকে চারজন এবং সুরমান জেল থেকে তিনজন বাংলাদেশিকে মুক্ত করে তাদের নিকটাত্মীয়দের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও দূতাবাস লিবিয়ায় মৃত্যুবরণকারী দুইজন বাংলাদেশি নাগরিকের মৃতদেহ সরকারি খরচে দেশে প্রেরণ করেছে।
লিবিয়ার স্ট্যাবিলিটি সাপোর্ট অ্যাপারেটাস (এসএসএ) গত ১৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ত্রিপলীর মাসরোয়া এলাকা থেকে বাংলাদেশিদের অপহরণের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের তিনজন বাংলাদেশিকে আটক করে এবং তাদের নিকট থেকে জিম্মি দশজন বাংলাদেশিকে মুক্ত করে। দূতাবাস এ ঘটনায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং ভুক্তভোগীদের আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দূতাবাস লিবিয়ায় অপরাধ চক্রের সাথে সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করেছে।
স্বেচ্ছায় দেশে যাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে আইওএম-এর নিকট নিবন্ধিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে দূতাবাস সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। এ লক্ষ্যে ২৩৮ জন অভিবাসীর আউটপাস ও নতুন পাসপোর্টে বহির্গমন ভিসা (খুরুজ) পেতে প্রয়োজনীয় লস্ট সার্টিফিকেট সংগ্রহে লিবিয়ার পাসপোর্ট ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করেছে। আশা করা যাচ্ছে মে মাসে এসকল আবেদনকারীদের দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে। এছাড়াও আগামী ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে বেনগাজী থেকে একটি ফ্লাইট পরিচালনার লক্ষ্যে আইওএম ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দূতাবাসের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
লিবিয়ার মাসাদের কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশি পেশাজীবীদের কর্মপরিবেশ ও সুবিধা পর্যবেক্ষণে দূতাবাসের প্রতিনিধি দল প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে এবং মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে। এসময় কর্মরত বাংলাদেশিদের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সন্তোষজনক বলে জানা যায়। এছাড়াও দূতাবাসে ডিজিটাল পাসপোর্ট রি-ইস্যুর জন্য আবেদনকৃত ২৫০টি পাসপোর্ট বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে এসে পৌঁছেছে। এসব পাসপোর্ট একটিভেট করে দ্রুত আবেদনকারীদের মাঝে বিতরণের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।
অপরদিকে দূতাবাস হতে তিউনিসিয়ার বিভিন্ন শহরে আটকে পড়া ৩২ জন বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত করে তাদের নামে ট্র্যাভেল পারমিট ইস্যু করা করা হয়েছে এবং আউটপাসসমূহ আইওএম তিউনিসিয়ার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দূতাবাসের প্রতিনিধি তাদের সাথে সাক্ষাৎ করে আগামী ২৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ২১ জনকে প্রাথমিকভাবে দেশে পাঠানোর বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে। অবশিষ্টদের দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানোর সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া দূতাবাস হতে জানবুদা শহরে আটক দুইজন বাংলাদেশিকে ২২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে স্থানীয় আদালতে প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে তারা অচিরেই মুক্তি পাবেন।
বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা, কল্যাণ এবং সেবা নিশ্চিত করতে সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।












