
পিবিএন ডেস্ক| সালালাহ | ওমান :
ধোফারের কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে এক ভিন্নধর্মী উদ্যোগে নজর কেড়েছেন শিক্ষক আহমেদ বিন সাঈদ আল মা’শানী। পেশায় শিক্ষক হলেও, অবসর সময়ে তিনি কৃষক — আধুনিক প্রযুক্তি ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান মিলিয়ে গড়ে তুলেছেন এক পরিবেশবান্ধব ও টেকসই খামার।
প্রতিদিন স্কুল শেষে তিনি নিজের ছোট খামারে যান। সেখানে কলা, আম, কমলা, কাঁঠাল, ভুট্টা, লোবিয়া, টমেটো, শসা, বেগুনসহ নানা ফল ও সবজি চাষ করেন। এ বছর তিনি পরীক্ষামূলকভাবে হলুদ চাষ শুরু করেছেন।
আল মা’শানী বলেন, “আমি বেশি ফসলের পেছনে ছুটি না। আমি দেখি জমির ধরন ও এলাকার আবহাওয়া অনুযায়ী কোন ফসল মানানসই।”
ধোফারের কৃষি মৌসুম অন্যরকম। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খরিফ মৌসুমে পাহাড়ে থাকে ঠান্ডা কুয়াশা, আর এর পরের সার্ব মৌসুমে (সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বর) থাকে মৃদু ও শুকনো আবহাওয়া। এই সময়সূচি মেনে তিনি তার চাষাবাদের পরিকল্পনা সাজান।
তিনি ড্রিপ সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে পানি সাশ্রয় করেন, জৈব মালচ ব্যবহার করে মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ছায়া জাল ব্যবহার করেন। খরিফের পর পোকার আক্রমণ ও তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে তিনি ফসল রক্ষা করেন ফসল ঘূর্ণন ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে।
আল মা’শানী বলেন, “ঋতুর সঙ্গে লড়াই না করে তাকে বুঝে কাজ করতে হয়। তখন ফলনও ভালো হয়, মাটিও টিকে থাকে।”
শিক্ষক হলেও নিজের খামারকেই তিনি আরেকটি শ্রেণিকক্ষ মনে করেন। সেখানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসেন, দেখান কীভাবে প্রকৃতি, পানি ও সময়ের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করলে সাফল্য আসে।
তিনি বলেন, “সবাই বড় জমি না পেলেও কৃষি শুরু করতে পারে। দরকার শুধু পরিকল্পনা, ধৈর্য আর নিজের এলাকার ফসলের প্রতি ভালোবাসা।”
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আহমেদ আল মা’শানীর মতো উদ্যোগী মানুষরাই ধোফারের কৃষিকে নতুন সম্ভাবনার পথে নিয়ে যাচ্ছেন — যেখানে শিক্ষা, প্রযুক্তি ও প্রকৃতি একসাথে কাজ করছে টেকসই ভবিষ্যতের জন্য।














